ইতোমধ্যে এ বিষয়ে তার আগ্রহের কথা বলেছেন। আর স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করার কথা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এখনও বিষয়টি অনুমোদন না করলেও অল্প কিছু দেশে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের করোনাভাইরাসের টিকা দেওয়া শুরু করেছে। আর এ বিষয়ে দেশে দেশে দেখা যাচ্ছে আলাদা নীতি ও কৌশল।
শিশুদের টিকা দেওয়ার এ তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে যুক্তরাজ্য। দেশটিতে এখন থেকে ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের কোভিড টিকা দেওয়া হবে। ১৫ বছরের বেশি বয়সীদের তারা আগেই টিকার আওতায় এনেছিল।
যুক্তরাজ্যের প্রধান চিকিৎসা কর্মকর্তরা যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি ফাইজারের টিকার একটি করে ডোজ শিশুদের দেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন।
শিশুদের টিকা দেওয়ার ক্ষেত্রে কোন দেশ কোন নীতি এবং কৌশল অবলম্বন করছে তার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে বিবিসির এক প্রতিবেদনে।
গত মে মাসে ইউরোপিয়ান মেডিসিন্স এজেন্সি (ইএমএ) ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সীদের ফাইজারের টিকা দেওয়ার অনুমোদন দিয়েছে। এরপর থেকে ইউরোপেরা বিভিন্ন দেশ ভিন্ন ভিন্ন গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।
ডেনমার্ক ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী এবং স্পেন ১২ থেকে ১৯ বছর বয়সীসহ তাদের প্রায় সব শিশুকে টিকার অন্তত একটি করে ডোজ দিয়েছে।
ফ্রান্সে ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সীদের ৬৬ শতাংশকে টিকার একটি ডোজ দেওয়া হয়েছে। দেশটিতে দ্রততার সঙ্গে এগিয়ে চলা এই টিকাদান কর্মসূচিতে ইতোমধ্যে ৫২ শতাংশ শিশু টিকার দুটি ডোজই পেয়েছে।
দেশটিতে আগামী অক্টোবরে মধ্যে ‘হেলথ পাসের’ বয়স সীমা বাড়িয়ে অনূর্ধ্ব ১৮ বছর পর্যন্ত করা হচ্ছে। যার ফলে সিনেমা, মিউজিয়াম, রেস্তোরাঁ এবং শপিং সেন্টারের মত বদ্ধ জায়গায় যেতে হলে কিশোর এবং তরুণদের টিকার সনদ কিংবা কোভিড নেগেটিভ থাকার প্রমাণ দিতে হবে।
গত জুনে জার্মানির বৈজ্ঞানিকরা সুপারিশ করেছেন, শারীরিকি অসুস্থতা থাকলেই কেবল ১২ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়া উচিত। কিন্তু করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনের বিস্তারের মধ্যে গত অগাস্টে বয়সসীমা বাড়িয়ে ১২ বছরের ঊর্ধ্বে সবাইকে টিকা দেওয়া শুরু করা হয়।
গত মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় প্রথম ১২ বছরের বেশি বয়সী শিশুদের ফাইজারের টিকা দেওয়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন এলাকায় তিন সপ্তাহের ব্যবধানে শিশুদের টিকার দুটি ডোজ দেওয়া শুরু হয়।
জুলাইয়ের শেষ নাগাদ ১২ থেকে ১৭ বছর বয়সী শিশুদের ৪২ শতাংশকে ফাইজার কিংবা মডার্নার টিকার অন্তত একটি ডোজ দেওয়া হয় এবং ৩২ শতাংশকে দুটি ডোজই দেওয়া হয়েছে।
করোনাভাইরাসের ডেল্টা ধরনে সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ার পর শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র।
সেন্টার ফর ডিজিস কন্ট্রোল- সিডিসির তথ্য অনুযায়ী যেসব এলাকায় টিকা দেওয়ার হার সবচেয়ে কম সেখানে শিশুদের কোভিড আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তির হার ৩ দশকি ৪ থেকে ৩ দশমিক ৭ গুণ বেশি।
যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি স্কুল কর্তৃপক্ষ ১২ বছর ও তার বেশি বয়সীদের ক্লাসে অংশ নিতে টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করার পক্ষে ভোট দিয়েছে। অভিভাবকরা অবশ্য এর বিরোধিতা করেছেন।
ইতোমধ্যে ৬ লাখ শিক্ষার্থীকে টিকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে লস এঞ্জেলস কর্তৃপক্ষ। নিউ ইয়র্কে অবশ্য শিক্ষার্থীদের টিকা না দিয়ে স্কুলের সব কর্মীর টিকা নেওয়া বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
ওষুধ কোম্পানি ফাইজারের পক্ষ থেকেও কম বয়সী শিক্ষার্থীদের ওপর টিকার পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। আগামী সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৫ থেকে ১১ বছর বয়সীদের ওপর টিকা পরীক্ষার ফলাফল তথ্যসহ পাওয়ার আশা করছে কোম্পানিটি। ৬ মাস থেকে ৪ বছর বয়সীদের ওপর টিকা পরীক্ষার ফল এ বছরের শেষ নাগাদ পাওয়া যেতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইতোমধ্যে আভাস দিয়েছেন, নিয়ন্ত্রক প্রতিষ্ঠানগুলো টিকা পরীক্ষার ফল পর্যালোচনা করার পর কম বয়সী শিশুদেরও টিকার আওতায় আনা হতে পারে।